সার্বজনীন পহেলা বৈশাখ বা পয়েলা বৈশাখ – লেখকঃ আসসাদুজ্জামান আরমান (প্রকাশক ও সম্পাদক)
- আপডেট সময় : ০৭:১৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৯১ বার পড়া হয়েছে
১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দে ৯৬৩ হিজরিতে মুঘল সম্রাট জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ আকবর এর মসনদে আরোহনের সময় থেকে বাংলা পঞ্জিকার শুরু। ইংরেজি পঞ্জিকাতে রাত ১২.১ মিনিট থেকে দিন গনণা শুরু হয় , আরবি পঞ্জিকাতে চাঁদের উপর ভিত্তি করে তৈরি ।কিন্তু বাংলা পঞ্জিকা নির্ভর করে সৌর অর্থ্যাত সূর্যালোকের উপর, সূর্য উদয়ের সময় থেকে দিন গননা শুরু। পরবর্তীতে বাংলা একাডেমী ১৪০২ বঙ্গাব্দের আন্তর্জাতিক সময়ের সাথে মিল রেখে রাত ১২.১ মিনিটে দিন গননা শুরু হয়। যদিও নানা রকমের মতামত রয়েছে তা নিয়ে । তবে পশ্চিমবঙ্গে চন্দ্র-সৌর বাংলা পঞ্জিকা অনুসরন করায় ১৫ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়।
বাঙ্গালী জাতীর একটি সার্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ। এটি সর্বপ্রথম পুরান ঢাকার মুসলিম মাহিফরাস সম্প্রদায়ের মানুষ শুরু করে। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে সকল পর্যায়ের মানুষ এটিকে নিজেদের উৎসবে রুপান্তরীত করে । আর ব্যবসায়ীরা বাংলা বর্ষের পঞ্জিকা অনুসারে ব্যবসায়ীক হিসাব গননা শুরু করে। বাংলা সালের প্রথম মাস বৈশাখ, আর তাই বৈশাখের প্রথম দিনকে আনন্দ উৎসবের মধ্যে দিয়ে উদযাপন করা হয়।এই দিনে কৃষক তার কর্ম শুরু করে , ব্যবসায়ীরা ব্যবসা, জমিদাররা তাদের খাজনা আদায় করত, যা আজ বিলুপ্ত । আর ব্যবসায়ীরা বাকী টাকা উত্তোলনে হালখাতার আয়োজন করে , পাওনা টাকা আদায় করার জন্য। আয়োজনে আনা হয় বহুমাত্রিক উৎসব ,যা অনেক অঞ্চলে চলে মাসব্যপী। উৎসবে বহুমাত্রিক আয়োজন সকাল থেকে শুরু হয়। প্রিয় এবং সহজলভ্য ভাল খাবারের আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় পহেলা বৈশাখের উৎসব।
১৯২০ সালের আগে ভাল কাপড় পরে বাঙ্গালিরা জমিদারদের বাড়িতে যেত খাজনা দেওয়ার জন্য। বিখ্যাত সকল লেখকেরা এটিকে “পুল্যাহ “ বলে উল্লেখ করেছেন। বিভিন্ন এলাকায় মেলার আয়োজন হয়। সেখানে নাচ গান দোকান পাট বসতো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের, যেটি এখনো চোখে পড়ে।তার মধ্যে পড়ে মাটির তৈরি হাড়,পুতুলের মেলা, যা দরগা মেলা হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। বিভিন্ন এলাকায় লাঠিখেলা , গরুর দৌড় এবং গ্রাম গঞ্জের বহু জনপ্রিয় খেলার মাধ্যমে আয়োজন হয় মেলার।
গ্রাম বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, হাসি, কান্না,সংসার,বৈরাগ্য, কর্ম,ব্যাবসা, আনন্দ, বেদনার এক বহিঃপ্রকাশ বাংলা নববর্ষ, পহেলা বৈশাখ।